কবি হেলাল হাফিজ

কবি হেলাল হাফিজ নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়
৭ অক্টোবর বাংলাদেশের জনপ্রিয় এই কবির ৭২তম জন্মদিন ]
‘এখন যৌবন যার. নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ নামে একটি কবিতা লিখে যৌবনেই বিখ্যাত হয়ে যান আপনি, সেই কবিতায় তখন লিখেছিলেন ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/ এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।’
এই কবিতা লেখার প্রেক্ষাপট ছিল ১৯৬৯ সালের গণ-আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে।
এ কবিতার কথা মানুষ জানল কীভাবে?
ছফা ভাই (আহমদ ছফা) ও কবি হুমায়ুন কবির সদ্য লেখা সেই কবিতাসহ আমাকে নিয়ে গেলেন দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকা অফিসে, স্বনামধন্য কবি আহসান হাবীবের কাছে। পত্রিকা বন্ধও হয়ে যেতে পারে। তবে একটা কথা বলি, হেলালের আর কোনো কবিতা না লিখলেও চলবে। অমরত্ব ওর করায়ত্ত হয়ে গেছে।
ওই একটা কবিতা আমার জীবনকে পাল্টে দিয়েছে যখন ছাত্র, তখনই আমার চাকরি হয়ে যায় দৈনিক পূর্বদেশ-এ।
চিকা মারা কী, সেটার মর্ম বুঝতে পারবে না। গভীর রাতে, ভীতিকর পরিবেশে দেয়াললিখনরত তরুণদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কী করছ? উত্তরে ওরা বলেছিল, চিকা (ছুঁচো) মারছি। সেই থেকে দেয়াললিখনের কাজকে বলা হতো চিকা মারা।
স্বাধীনতার পরও চার-পাঁচ বছর আমি সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে (সাবেক ইকবাল হল) ছিলাম।
আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের এক ক্লাস ওপরে পড়তেন। তখন তাঁকে দেখলেই দুষ্টুমি করে বলতাম, ওই যে অড্রে হেপবার্ন যায়। শেখ হাসিনাকে যে অড্রে হেপবার্ন বলতাম, তিনি সেটা বেশ উপভোগ করতেন বলে মনে হয়। সেই সময়ে সোফিয়া লরেন, অড্রে হেপবার্ন, সুচিত্রা সেন—এঁরা ছিলেন বিখ্যাত নায়িকা।
২০১৪ সালে যখন আমি তাঁর হাত থেকে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার গ্রহণ করি, তখন ধরা পড়তেই হলো। একাডেমি মঞ্চে পুরস্কার নিচ্ছি। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আমাদের টুনটুনি (হাসি) কেমন আছে রে, হাসি তৎকালীন ছাত্রলীগের চার খলিফার একজন প্রয়াত আবদুল কুদ্দুস মাখনের স্ত্রী।
আপনার যৌবনের কথা, বরাবরই আমি অব্যবস্থিতচিত্ত মানুষ। অগ্রজ কবি শামসুর রাহমান ও হাসান হাফিজুর রহমানের কাছে ধরনা দিয়ে আমি আর আবুল হাসান খাবারের জন্য টাকাপয়সা নিতাম। হাসান ভাই পাঁচ টাকার বেশি দিতেন না। কবি মোহাম্মদ মাহ্ফুজউল্লাহ্র একটা প্রবন্ধ ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তানের কবিতায় প্রকৃতি’।
আমার পুরস্কারের সব বই নেত্রকোনা পাবলিক লাইব্রেরিতে উপহার হিসেবে দিয়ে দিই। এর বিনিময়ে আমার আব্বাকে পাবলিক লাইব্রেরির আজীবন সদস্য পদ দেওয়া হয়েছিল।
এখন যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি, সেটা আগে ছিল পাবলিক লাইব্রেরি। ওই চত্বরে বিখ্যাত ভাস্কর নভেরা আহমেদের বেশ কিছু ভাস্কর্য ছিল। একটি ভাস্কর্যের পাশে আমরা দুজন বসলাম একদিন। হেলেন আমাকে চমকে দিয়ে বলল, আমি তো অন্য একজনকে বিয়ে করতে যাচ্ছি।
No comments